পাসপোর্ট হয়েছে কিনা কীভাবে চেক করবেন? – ২০২৫ সালের সম্পূর্ণ গাইড

 

নতুন-পাসপোর্ট-চেক-করার-নিয়ম-২০২৫



পাসপোর্ট হয়েছে কিনা কীভাবে চেক করবেন? – ২০২৫ সালের সম্পূর্ণ গাইড

পাসপোর্ট হচ্ছে দেশের বাইরে যাত্রার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আইডেন্টিটি ডকুমেন্ট। বাংলাদেশে পাসপোর্ট করানো এখন অনেক সহজ ও ডিজিটালাইজড হয়েছে। তবে, অনেক সময় আবেদন করার পর মানুষ চিন্তিত থাকে — “আমার পাসপোর্ট হয়েছে কি না?”, “পাসপোর্ট প্রস্তুত হয়েছে কিনা কিভাবে জানবো?”। এই আর্টিকেলটিতে আমি বিস্তারিতভাবে পাসপোর্টের স্ট্যাটাস চেক করার সহজ ও অফিসিয়াল উপায়গুলো তুলে ধরছি, যাতে আপনি আপনার আবেদন প্রক্রিয়া বুঝতে পারেন এবং কোনো বিভ্রান্তিতে না পড়েন।


১। পাসপোর্টের গুরুত্ব

পাসপোর্ট একটি আন্তর্জাতিক ভ্রমণের অনুমতি দেয়। এটি দেশের সরকার কর্তৃক প্রদত্ত একটি আইডেন্টিটি এবং ভ্রমণ ডকুমেন্ট। তাই, পাসপোর্টের আবেদন এবং তার স্ট্যাটাস নিয়মিত মনিটর করা জরুরি।


২। পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া সংক্ষেপে

বাংলাদেশে পাসপোর্ট আবেদন এখন অনেক সহজ। আগের মতো সরাসরি অফিসে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করার দরকার নেই। আপনি অনলাইনে আবেদন করতে পারেন, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করতে পারেন এবং ফি অনলাইনে দিতে পারেন। এরপর আপনার আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়।


৩। পাসপোর্টের ধরণ

বাংলাদেশে বর্তমানে দুই ধরনের পাসপোর্ট পাওয়া যায়:

  • ই-পাসপোর্ট (ePassport): আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি, নিরাপদ, স্মার্ট চিপ যুক্ত।
  • এমআরপি পাসপোর্ট (Machine Readable Passport): যা প্রাচীন মেশিন রিডেবল ফরম্যাটে তৈরি হয়।

পাসপোর্টের ধরণের উপর নির্ভর করে স্ট্যাটাস চেকের পদ্ধতি আলাদা।


৪। পাসপোর্ট স্ট্যাটাস অনলাইনে কিভাবে চেক করবেন?

৪.১ ই-পাসপোর্টের জন্য (ePassport)

১. ওয়েবসাইটে যান: https://www.epassport.gov.bd/
২. মেনু থেকে “Application Status” অপশন নির্বাচন করুন।
৩. আপনার Online Application ID এবং Date of Birth (DD-MM-YYYY) দিন।
৪. “Check Status” ক্লিক করুন।
৫. এখন আপনি দেখতে পাবেন:

  • আপনার আবেদন বর্তমানে কোন ধাপে আছে (যেমন পুলিশ যাচাই, প্রিন্টিং, ডেলিভারি প্রস্তুত ইত্যাদি)
  • যদি পাসপোর্ট তৈরি হয়ে থাকে, লেখা থাকবে “Your passport is ready for delivery”।

৪.২ এমআরপি পাসপোর্টের জন্য (MRP)

১. ওয়েবসাইটে যান: https://passport.gov.bd/OnlineStatus.aspx
২. আপনার Enrolment ID বা Delivery Slip Number এবং Date of Birth দিন।
৩. “Check Status” বাটনে ক্লিক করুন।
৪. আপনি দেখতে পাবেন:

  • আবেদন প্রক্রিয়ার অবস্থান
  • পাসপোর্ট প্রিন্টেড হয়েছে কি না
  • ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত কি না


৫। মোবাইল থেকে পাসপোর্ট স্ট্যাটাস চেক করার উপায়

১. আপনার স্মার্টফোনে Chrome বা যেকোনো ব্রাউজার খুলুন।
২. ই-পাসপোর্টের জন্য: epassport.gov.bd
৩. এমআরপি পাসপোর্টের জন্য: passport.gov.bd
৪. প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে স্ট্যাটাস চেক করুন।

টিপস: মোবাইল থেকে চেক করতে অবশ্যই ভালো ইন্টারনেট কানেকশন ব্যবহার করুন।


৬। পাসপোর্ট রেডি হলে কিভাবে বুঝবেন?

  • SMS এর মাধ্যমে: আবেদনকৃত মোবাইল নম্বরে সরকার থেকে একটি SMS পাঠানো হয়, যেখানে লেখা থাকে পাসপোর্ট তৈরি হয়ে গেছে এবং কবে কোথায় নিতে পারবেন।
  • অনলাইন স্ট্যাটাস: ওয়েবসাইটে “Ready for Delivery” বা “পাসপোর্ট প্রস্তুত” স্ট্যাটাস দেখায়।
  • পাসপোর্ট অফিস থেকে কল: কখনও অফিস থেকে ফোন করে জানানো হয়।
  • সরাসরি অফিসে গিয়ে: যদি উপরের কোনো উপায় কাজে না লাগে, আবেদন নম্বর নিয়ে অফিসে গিয়ে জেনে নিতে পারেন।


৭। SMS না আসার সাধারণ কারণ ও সমাধান

  • ভুল মোবাইল নম্বর: আবেদন করার সময় সঠিক মোবাইল নম্বর দিন।
  • নেটওয়ার্ক সমস্যা: কখনও মোবাইল নেটওয়ার্ক খারাপ থাকায় SMS পেতে বিলম্ব হয়।
  • স্প্যাম ফিল্টার: মোবাইলে স্প্যাম ফিল্টার চালু থাকলে SMS ব্লক হতে পারে।
  • সরকারি সিস্টেমের দেরি: অনেক সময় সার্ভারে বেশি ট্রাফিক থাকলে SMS পাঠাতে সময় লাগে।
  • অপেক্ষমান ফি বা তথ্য অসম্পূর্ণতা: যদি আবেদন সম্পূর্ণ না হয় বা ফি জমা না হয়, SMS আপডেট নাও আসতে পারে।
  • SIM কার্ড বন্ধ বা ডিএনডি মোডে: SMS ব্লক হতে পারে।

পরামর্শ: নম্বর সঠিক কিনা যাচাই করুন, নেটওয়ার্ক ভালো কিনা দেখুন, প্রয়োজনে পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করুন।


৮। পাসপোর্ট নিতে কী কী প্রয়োজন?

  • আবেদন ফরম (সরকারি নির্ধারিত)
  • জাতীয় পরিচয়পত্র (মূল ও ফটোকপি)
  • জন্ম নিবন্ধন বা জন্ম সনদ
  • জাতীয়তা প্রমাণপত্র
  • সাম্প্রতিক রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • ফি প্রদান রশিদ
  • ঠিকানার প্রমাণ (বিদ্যুৎ/গ্যাস বিল ইত্যাদি)
  • অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট (যেমন বিবাহ সনদ, পুরাতন পাসপোর্ট)


৯। পাসপোর্টের আবেদন কতো দিনে হয়?

  • Regular: ২১ কার্যদিবস
  • Express: ৭ কার্যদিবস
  • Super Express: ২-৩ কার্যদিবস


১০। পাসপোর্ট চেক করার সময় সতর্কতা

  • শুধুমাত্র সরকারি ওয়েবসাইট ব্যবহার করুন।
  • আপনার Application ID বা পাসপোর্ট নম্বর কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না।
  • সন্দেহজনক কোন ওয়েবসাইট বা অ্যাপ ব্যবহার করবেন না।
  • পাসপোর্ট সংক্রান্ত তথ্য চুরি থেকে রক্ষা করতে বিশ্বাসযোগ্য মাধ্যম বেছে নিন।


১১। সাধারণ প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন: আবেদন করার পর পাসপোর্ট কেন বিলম্ব হয়?
উত্তর: পুলিশ যাচাই প্রক্রিয়া দীর্ঘ হলে, তথ্য অসম্পূর্ণ হলে বা ফি জমা না হলে বিলম্ব হতে পারে।

প্রশ্ন: পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে কী করতে হবে?
উত্তর: নিকটস্থ পুলিশ স্টেশন এবং পাসপোর্ট অফিসে দ্রুত জানাতে হবে।

প্রশ্ন: অনলাইনে ফি কিভাবে জমা দিব?
উত্তর: সরকারি পাসপোর্ট ওয়েবসাইট থেকে ব্যাংক, বিকাশ, নগদ ইত্যাদির মাধ্যমে অনলাইন ফি প্রদান করা যায়।


১২। উপসংহার

আজকের দিনে পাসপোর্ট করার পুরো প্রক্রিয়া ডিজিটাল এবং সোজা। অনলাইনে স্ট্যাটাস চেক করার মাধ্যমে আপনি আপনার আবেদন সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন। নিরাপত্তা এবং সরকারি নির্দেশনা মেনে চলা আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

যদি কোনো সমস্যা হয়, সরকারি হেল্পলাইন নম্বরে কল করুন বা নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করুন।

আরো পড়ুন: ডলার রিসিভ করার জন্য Payoneer অ্যাকাউন্ট কিভাবে খুলব

হেল্পলাইন তথ্য

  • ই-পাসপোর্ট কাস্টমার কেয়ার: ১৩৩৪৪
  • ই-মেইল: info@epassport.gov.bd
  • পাসপোর্ট অফিস সময়: সকাল ৯টা – বিকেল ৫টা (সরকারি দিন)

আপনি চাইলে আমি এখন এই কন্টেন্টের সম্পূর্ণ Word বা Google Doc ফরম্যাটে তৈরি করে দিতে পারি। অথবা এর কোনো বিশেষ অংশে আরো বিস্তারিত যোগ করতে চাইলে জানাবেন।

Previous Post Next Post